অনিকের অশ্রুভেজা রাত
রাত ৩টা। সারা শহর ঘুমিয়ে, কিন্তু আমার মনে কোনো অস্থিরতা কাজ করছে। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল, স্ক্রিনে তোমার নাম দেখে অবাক হলাম। এত রাতে তুমি আমাকে ফোন করেছ, কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে ফোনটা ধরলাম।
"হ্যালো, তুমি ঘুমাচ্ছিলে?" তোমার কণ্ঠে কিছুটা কম্পন।
"না, ঠিক ঘুমাচ্ছিলাম না। তুমি ঠিক আছো?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
"হ্যাঁ, ঠিক আছি। শুধু... একটু গান শুনতে ইচ্ছে করছে। তোমার কণ্ঠে শুনতে চাই।" তোমার কণ্ঠে ছিল এমন কিছু, যা আমার হৃদয়কে স্পর্শ করল।
আমি একটু দ্বিধায় পড়লাম, এত রাতে কেন তোমার এই অনুরোধ? কিন্তু কিছুই বললাম না, শুধু গান ধরলাম।
"তুমি বীণায় সুর বাজাও আমার মনে..."
কণ্ঠটা কাঁপতে শুরু করল। গাইতে গাইতে মনে হলো যেন কিছু চাপা বেদনা ভেতর থেকে উঠে আসছে। সুরের সঙ্গে সঙ্গে মনে সব আবেগ উথলে উঠতে শুরু করল। চোখের কোণে জমে উঠল অশ্রু, যা ঠেকিয়ে রাখতে পারলাম না।
আমার কণ্ঠ যখন ভেঙে গেল, তখনই অনুভব করলাম, ওপাশ থেকে তুমি কাঁদছো। তোমার কান্নার শব্দ আমার কানেও এলো। আমাদের দুজনের কণ্ঠেই তখন শুধু কান্নার সুর।
কিছুক্ষণ ধরে আমরা দুজনেই নীরবে কান্না করলাম। কোনো কথা ছিল না, শুধু কান্না আর সেই সুরের ধ্বনি। মনে হলো, এই মুহূর্তে আমরা দুজনেই একে অপরের কষ্ট ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। আমাদের কণ্ঠে থাকা কান্না এক অদ্ভুত সংযোগ তৈরি করল, যা কোনো কথার প্রয়োজন ছিল না।
"ধন্যবাদ," তুমি বললে, কণ্ঠে গভীর বেদনা।
"তুমি কেমন আছো?" আমি জানতে চাইলাম, কিন্তু উত্তর দিলে না। শুধু ফোনটা কেটে দিলে।
সেই রাতের নীরব কান্না আর গানের সুর আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে রয়ে গেল। মনে হলো, আমাদের জীবনে কোনো গভীর সংযোগ তৈরি হলো, যা অশ্রুভেজা রাতে শুরু হয়েছিল। সেই কান্না আর গানই আমাদের জীবনে চিরকালীন স্মৃতি হয়ে থাকবে, যা কখনো ভুলতে পারবো না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন