পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বৃষ্টির দিন, রোদ্দুরের প্রেম

আজ খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেছে নাসির। আজকের দিনটা তার জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয়ন্তিকা, যার জন্য তার হৃদয়ে এত গভীর ভালোবাসা, আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। নাসিরের ইচ্ছে ছিল ওর সাথে একই বাসে যাত্রা করার, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সে বাস মিস করে বসে। নিরুপায় হয়ে নাসির আরেকটি বাসে চেপে বসে, মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। বাসে বসে নাসিরের মনটা এলোমেলো চিন্তায় ভরে যায়। সে জানে, প্রিয়ন্তিকার চাচ্চু সাথে আছে, তাই সে একদমই একা নয়। কিন্তু নাসিরের মন বলে, প্রিয়ন্তিকার পাশে থাকার দায়িত্বটা যেন তারই ছিল। বাস চলতে থাকে, আর নাসিরের মনের ভিতর অস্থিরতা বাড়তে থাকে। রাজশাহীর পথে বাস ছুটে চলে, নাসির জানে, ক্যাম্পাসে পৌঁছেই তাকে প্রিয়ন্তিকাকে খুঁজে বের করতে হবে, যে কোনো মূল্যেই হোক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানোর পর নাসির দ্রুত ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। সেখানে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী, প্রত্যেকেই যেন নাসিরের চোখের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। প্রতিটা মুখের মধ্যে সে প্রিয়ন্তিকার ছায়া খুঁজে ফেরে, কিন্তু তার মন যেন ওকে চিনে নিতে চাইছে না। শেষমেশ, সেই পরিচিত মুখটা খুঁজে পেতে তার বু...

ভিজা জানালা

  পাবনা শহরের প্রতিটি কোণায় যেনো নাসির আর প্রিয়ন্তিকার স্মৃতি আঁকা। হাইস্কুল থেকেই তাদের বন্ধুত্ব, আর সেই বন্ধুত্বের গাঢ় রঙ এখন প্রেমের রূপ নিয়েছে। প্রিয়ন্তিকার হাসিতে নাসিরের সকাল শুরু হয়, আর প্রিয়ন্তিকার কথা না শুনলে নাসিরের দিনটা যেন কেটে যায় না। দিনগুলো চলছিলো এমনই মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়ে, হঠাৎ একদিন প্রিয়ন্তিকা জানালো সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাবে। নাসিরের মনটা খুশিতে ভরে উঠলেও কিছুটা চিন্তাও হচ্ছিল। পাবনা থেকে দূরে, নতুন জায়গা, নতুন মানুষ—কিছুটা উদ্বেগ তো থাকেই। কিন্তু প্রিয়ন্তিকার পাশে থাকতে নাসিরও সিদ্ধান্ত নিলো তার সঙ্গী হবে এই যাত্রায়। রাতের বাস, বাইরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। প্রিয়ন্তিকার বাবা প্রিয়ন্তিকার আরেক বান্ধবী আইরিনসহ চারজন মিলে রওনা হলো ঢাকার উদ্দেশ্যে। নাসির কিন্তু ছদ্মবেশে,  প্রিয়ন্তিকার পিছনের সিটে বসা নাসির, চোখের কোণায় প্রিয়ন্তিকার প্রতিটি পদক্ষেপ নজর রাখছিলো। প্রিয়ন্তিকা বসেছিল জানালার পাশে। কিছুক্ষণ পরে বাইরে বৃষ্টির ফোঁটা দেখতে দেখতে জানালা খুলে হাত বের করে দেয় প্রিয়ন্তিকা। বৃষ্টির ফোঁটা যেন ওর হাতের সাথে খেলছিল, সেই মুহূর্তেই ...

সংসার সুখের সন্ধানে

মাফুজা আর রিয়ান, দুইজনেই ছোটবেলা থেকে পাবনা শহরে বেড়ে উঠেছে। তারা একই হাইস্কুলে পড়াশোনা করত, আর সেই সময়েই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্ব থেকে প্রেমে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। হাইস্কুলের দিনগুলো ছিলো তাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়। ক্লাসের ফাঁকে, টিফিনের সময় কিংবা স্কুল ছুটির পরে, তারা একে অপরের সাথে সময় কাটাতো। প্রেমের উন্মাদনায় তারা ভবিষ্যতের কথা ভুলে যেত। তাদের প্রেম ধীরে ধীরে আরো গভীর হতে থাকে, এবং তারা একে অপরকে ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারত না। ইন্টারমিডিয়েট থাকতে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় ওদের। সেই সময় দুজনের মনেই ছিলো যে, তারা একে অপরের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। মাফুজা উচ্চশিক্ষার জন্য পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা এবং নতুন পরিবেশ মাফুজার জীবনে অনেক কিছুই পরিবর্তন নিয়ে আসে। সে নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হয়, পড়াশোনার চাপও বেড়ে যায়। প্রথমদিকে রিয়ান মাফুজার সাফল্যে গর্ববোধ করত, কিন্তু ধীরে ধীরে সে নিজের ভিতরে একাকীত্ব অনুভব করতে শুরু করে।  রিয়ান যে নিজেকে একা অনুভব করছে, তা মাফুজা প্রথমে বুঝতে পারেনি। রিয়ানের পরিবর্তন মাফুজার চোখে...

অনিকের অশ্রুভেজা রাত

রাত ৩টা। সারা শহর ঘুমিয়ে, কিন্তু আমার মনে কোনো অস্থিরতা কাজ করছে। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল, স্ক্রিনে তোমার নাম দেখে অবাক হলাম। এত রাতে তুমি আমাকে ফোন করেছ, কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে ফোনটা ধরলাম।  "হ্যালো, তুমি ঘুমাচ্ছিলে?" তোমার কণ্ঠে কিছুটা কম্পন।  "না, ঠিক ঘুমাচ্ছিলাম না। তুমি ঠিক আছো?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম। "হ্যাঁ, ঠিক আছি। শুধু... একটু গান শুনতে ইচ্ছে করছে। তোমার কণ্ঠে শুনতে চাই।" তোমার কণ্ঠে ছিল এমন কিছু, যা আমার হৃদয়কে স্পর্শ করল। আমি একটু দ্বিধায় পড়লাম, এত রাতে কেন তোমার এই অনুরোধ? কিন্তু কিছুই বললাম না, শুধু গান ধরলাম।  "তুমি বীণায় সুর বাজাও আমার মনে..." কণ্ঠটা কাঁপতে শুরু করল। গাইতে গাইতে মনে হলো যেন কিছু চাপা বেদনা ভেতর থেকে উঠে আসছে। সুরের সঙ্গে সঙ্গে মনে সব আবেগ উথলে উঠতে শুরু করল। চোখের কোণে জমে উঠল অশ্রু, যা ঠেকিয়ে রাখতে পারলাম না।  আমার কণ্ঠ যখন ভেঙে গেল, তখনই অনুভব করলাম, ওপাশ থেকে তুমি কাঁদছো। তোমার কান্নার শব্দ আমার কানেও এলো। আমাদের দুজনের কণ্ঠেই তখন শুধু কান্নার সুর।  কিছুক্ষণ ধরে আমরা দুজনেই নীরবে কান্না করলাম। কোনো কথা ছিল না, শুধু কান্ন...

অ্যাডভেঞ্চার ড্রিম

ছবি
প্রিয়ন্তিকা, একদিন তোমাকে নিয়ে দারুণ এক অ্যাডভেঞ্চারে বের হবো। প্রথমে যাত্রা শুরু করবো দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি পথে। ঠাণ্ডা হাওয়া আর চায়ের গন্ধে ভরে উঠবে চারপাশ। আমি তোমার জন্য বেছে আনবো দার্জিলিংয়ের সেরা চা, যার প্রতিটি চুমুকে তুমি পাবা পাহাড়ের স্নিগ্ধতা। এরপর আমাদের গন্তব্য হবে কাশ্মীর, যেখানে বরফে ঢাকা শীতল পরিবেশে তোমার কাঁধে জড়িয়ে দেবো কাশ্মীরি শাল। শালের নরম পরশে তুমি অনুভব করবে ভালোবাসার উষ্ণতা।  তারপর বিন্দাবনের পথে যাত্রা, যেখানে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের গল্পের মতোই মিষ্টি বিন্দাবনের মিষ্টি তোমার মুখে তুলবো। মিষ্টির স্বাদে ভরে উঠবে আমাদের হৃদয়। এবার চলবো মালদ্বীপের নীল সাগরের পাড়ে, যেখানে তুমি সাগরের ঢেউয়ের সাথে খেলে যাবে। সেখান থেকে তোমার জন্য নিয়ে আসবো সাগরের স্মৃতি ধরে রাখা কিছু শেল।  এরপর যাবো নেপালের উচ্চ পাহাড়ে, যেখানে তোমার জন্য বেছে আনবো হস্তশিল্পের নিপুণ কাজ, যা তোমার সৌন্দর্যকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে। তারপর মালয়েশিয়ায় যাত্রা, যেখানে তোমার জন্য কিনে আনবো বিখ্যাত সুগন্ধি, যা তোমার প্রতিটি পদক্ষেপকে মিষ্টি সুবাসে ভরিয়ে তুলবে। সব শেষে দুবাই, সোনালী মরুভূমির দেশে। ...